Tuesday, October 13, 2015

হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ) এর গুরুত্বপূর্ণ অছিয়ত - ইন্তেকালের এগার মাস পূর্বে স্বহস্তে লিপিবদ্ধ

হযরত হাফেজ্জী  হুজুর (রহ) এর গুরুত্বপূর্ণ অছিয়ত
(যা ইন্তেকালের এগার মাস পূর্বে হযরত (রহ) স্বহস্তে লিপিবদ্ধ করেছিলেন)

পূর্ববর্তী ওয়াছিতসমূহের পরিশিষ্ট এবং কাযিউল হাজাত এর মহান দরবারে আহাজারি মুনাজাত :
‘এলাহী  বহক্বে  বনী  ফাতেমা  
কেবর  কওলে ঈমান কুনাম খাতেমা
আগার দাওয়াতম  রদ  কুনি  ওয়ার  কবুল  
মান দস্তে  দামানে  আলে  রসূল
অর্থ:- মাওলাগো নবীকন্যা ফাতেমার কলিজার টুকরাদের ওসিলায় তাওহীদের কালেমা যেন হয় আমার শেষ কথা - মুনাজাত মঞ্জুর কর কিংবা না মঞ্জুর, সে তোমার মর্জি মাওলা আমি দুহাতে আকড়ে ধরেছি নবী পরিবারের নাজাত রজ্জু

হে মুমিন ভাইগণ আল-বেদা আসসালামু আলাইকুম মুহিব্বীন সাধারণ মুমিন ভাইগণের খিদমতে কিছু অছিয়ত

. আমার লিখিত অছিয়তনামা, নছিহত নামা এবং জরুরী  মামুলাত নিয়মিত পড়বেন এবং এতে বর্ণিত নছিহত হিদায়ত মুতাবেক আমল করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন

. দ্বীনি মাদরাসা কোরআন  মক্তব অধিক হতে অধিক সংখ্যায় কায়েম করতে সচেষ্ট থাকবেন এবং দেশে নাদিয়া নূরাণী ট্রেনিং নামে যে মোবারক আমল চালু হয়েছে, এটা দেশের প্রত্যেক বস্তিতে, মসজিদ মাদরাসা এমনকি প্রত্যেক ঘরে ঘরে জারি করতে হবে  প্রশিক্ষন  প্রাপ্ত  মুয়াল্লিম দ্বারা প্রত্যেক বস্তিতে শিশুদের দ্বীনী  তালিম এবং কোরআন শরীফের সহীহ তালিমের ব্যবস্থা করে আগামী  বংশধরদের দ্বীন এবং ঈমাণের হিফাজত করবেন এবং  ‘কু আনফুছাকুম ওয়া আহলিকুম নারান’   অর্থ তোমরা নিজদিগকে এবং নিজ পরিবার পরিজন কে জাহান্নাম হতে রক্ষা কর   এই নির্দেশের উপর আমল করে দুনিয়া আখেরাতের কামিয়াবী হাসিল করার চেষ্টা করবেন কাজ খুবই সুব্যবস্থাপনার সাথে করতে হবে যাতে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে দেশের প্রত্যেক বস্তিতে একটি করে কোরআনী মক্তব বা নূরানী প্রাইমারী  কায়েম হয়ে যায়

বিষয়ে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করবেন, যেন কাজ সরকার আমাদের উপর ন্যস্ত করে ইহার যাবতীয় ব্যয় আমাদের হাতে অর্পন করেন কেননা , ইলমে দ্বীনের সহিত সম্পর্কহীন সরকার কোনক্রমেই ইলমে দ্বীন প্রচারের খিদমত আঞ্জাম দেয়ার যোগ্য হতে পারে সরকার প্রস্তাবে সম্মত হলে উত্তম অন্যথায় সকল কালেমাগো মুসলমান সম্মিলিতভাবে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোকে সকল প্রকার জানী  মালী  সাহায্য করে আল্লাহর নিকট পুরস্কারের যোগ্য হবেন

. তাবলীগ জামাতে শরীক হয়ে মুরব্বীগণদের হিদায়াত মুতাবেক কাজকে আগে বাড়াবার যথাসাধ্য কোশেষ  করবেন তবে তাবলীগ জামাতের দায়িত্বশীল ভাইগণের খিদমতে অধমের একটি মশওয়ারা এই যে, তাবলীগি কাজে আপনারা যখন দেশের দূ দূরান্তের বস্তিগুলাতে গমন করবেন, তখন তাবলীগী কাজে আঞ্জাম দেয়ার সাথে সাথে এ ফিকির ও মেহনত অবশ্যই করবেন – যেন প্রত্যেক বস্তিতে একটি নূরানী প্রাইমারী কায়েম য়ে যায় প্রাইমারী নিসাবের মূল কাজ হবে বিশুদ্ধ কোরআন শিক্ষা,  ঈমান ক্বিদা শুদ্ধ করা  জরুরী মাসায়েল ইসলামী  জিন্দেগী  শিক্ষা দেয়া সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের পঞ্চম শ্রেণী মানের শিক্ষা এর অর্ন্তভুক্ত করতে হবে, তবে মোট শিক্ষাবর্ষ বৎসরের অধিক হবে না যদি প্রশিক্ষন প্রাপ্ত দক্ষ মূয়াল্লিম দ্বারা উপরোক্ত প্রশিক্ষণ আঞ্জাম দেয়া হয় , তাহলে ইনশাআল্লাহ এর ফলাফল খুবই আশাপ্রদ হবে প্রচলিত ইংরেজী পদ্ধতির  স্কুল সমূহ হতে বাহির হয়ে কোমলমতি মুসলিম শিশুরা স্বত:স্ফুর্তভাবে সকল  নূরানী  প্রাইমারীতে ভর্তি হতে শুরু করবে পর্যায়ক্রমে দেশের গ্রামে বস্তিতে এই প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে অদূর ভবিষ্যতে এমন মোবারক দিন ইনশাআল্লাহ আমরা দেখতে পাব যে, মুসলমানদের   শতকরা আশি ভাগ শিশু কোরআনি  শিক্ষা ইসলামী জিন্দেগীর সহিত পরিচিত হয়ে আগামী জীবনেও অটুট মজবুত  ঈমানের অধিকারী হবে। এই মজবুত বুনিয়াদের উপর যখন      ঈমানের মেহনত হবে , তখন ঈমানের সুউচ্চ ইমারতও মজবুত বে ফলে তবলিগী মেহনত যেমন ব্যাপকতা লাভ করবে তেমন পূর্ণাঙ্গতাও লাভ করবে


খেলাফত আন্দোলনের দায়িত্বশীল ভাইগণের খেদমতে কিছু অছিয়ত

. বৃটিশ আমলের শুরু হতেই আমাদের আকাবিরগণের পরিচালিত জিহাদী কার্যক্রম এবং শায়খুল হিন্দ হযরত মাওলানা মাহমুদুল হাসা দেওবন্দী হযরত মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী  রহমাতুল্লাহি আলাইহিমগণের আন্দোলনের বরকতে ভারত ইংরেজ মুক্ত হয়েছিল  অত:পর পূনার্ঙ্গ কোরআনী বিধান ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা ভিত্তিতে ওলামায়ে উম্মত মুজাহিদিনে ইসলামগণের কোরবানীর দৌলতে, বিশেষতঃ  হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (কুদ্দিসা  সিররূহ ) এর ত্মি ফয়েজ তাওয়াজ্জুহর উসিলায় পাকিস্তান অস্তিত্ব লাভ করেছিল  কি স্তু দু:খের বিষয় যে, দেশের নেতৃবর্গের অযোগ্যতা,  উদাসীনতা বিজাতীয় মন-মানসিকতার ফলে চল্লিশ বৎসরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও প্রতিশ্রুতি  ইসলামী  হুকুমত প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নাই এই মহান উদ্দেশ্যে হাসিলের জন্য লক্ষ লক্ষ মুজাহিদ বুকে তাজা খুন পেশ করেছিলেন, সেই খুনের হক আজও পূর্ণ করা হয়নি সেই অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করার মহান দ্দেশ্যে ওলামায়ে কেরামের মশওয়ারা অনুযায়ী অধম মাঠে এসে দাঁড়িয়েছে এবং এখন  পর্যন্ত স্থির রয়েছে যদিও আমি কমজোর বিপর্যস্ত

এখন মনে হয়, মওতের পয়গাম আসছে সুতরং, মহান আন্দোলনের গুরুত্বে কথা  বিবেচনা করে পূর্ববর্তী সকল অছিয়তের সহিত এই অছিয়তও জরুরী মনে করছি যে, আমার মৃত্যু পর খেলাফত আন্দোলনের মজলিসে শুরা ওলামায়ে কেরাম দ্বীনদার বুদ্ধিজীবিগণে পরামর্শ মতে একজন যোগ্য বিজ্ঞ এবং মুখলিস মুত্তাকী ব্যক্তিকে (যিনি নাসরানী ধ্যানধারণার অধিকারী নহেন ) এই অধমের স্থলে আমির নির্বাচিত করে নিবেন এবং শ্রবণ মাত্র পালন এই মর্মে তার হাতে বায়আত করে সকলে তাকে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হবেন এবং পারস্পারিক মিল মহব্বত ইত্তেফাক ইত্তেহাদের সহিত আন্দোলনকে মঞ্জিলে মকছুদে পানে আগে বাড়াতে থাকবেন  অবশ্য উপরোক্ত গুনসম্পন্ন আমীর নির্বাচনের খাতিরে আমর জানাজা দাফন কাফনে কোনক্রমেই যেন বিলম্ব করা না হয় বরং আমার মৃত্যুর পর সাময়িকভাবে আমার বড় বেটা ক্বারী আহমাদুল্লাহ (সাল্লামাহুকে আমার স্থলে রেখে কাফন জানাযা  সমাধান পূর্বক খুব তাড়াতাড়ি যেন আমাকে কবরের হাওলা রে দেয়া হয় অতপর: আহলে শুরা কর্তৃক স্থায়ী আমির নির্বাচিত হওয়া পূর্ব পর্যন্ত তারই নেতৃত্ব ন্দোলন যেন অব্যাহত রাখা হয় মওলভী হামীদুল্লাহ মাওলানা আব্দুল হাই (সালামুল্লাহু) সহ অন্যরা তার বিশেষ পরামর্শদাতা হিসেবে থাকবেন একটি দিনের জন্য যেন এই পদ শুন্য না থাকে  তঃপর, শুরার ওলামায়ে কেরাম দ্বীনদার বুদ্ধিজীবিগণদের মজলিসে পরামর্শের মাধ্যমে যা সাব্যস্ত হবে তদনুযায়ী আমল শুরু রে  দিতে হবে স্থলে টা স্পষ্ট রে বলতে হয় যে, কেন আমি বড় বেটা ক্বারী আহমাদুল্লাহ মিয়ার নাম প্রস্তাব করছি  ইহার কারণ প্রথমতঃ  বিগত কয়েক মাস পূর্বে লালবাগ জামেয়া  ক্বোরআনিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে উহাতে আমার কলিজার টুকরা মিয়া ক্বারী আহমাদুল্লাহ মওলভী হাফেজ আতাউল্লাহ সহ অন্যান্য দোস্ত আহবাবে উপর অত্যন্ত নির্দয় নির্মম ভাবে হামলা চালানো হয়েছিল, উহা কল্পনা করলে দিল চুর্ণবির্চুণ হয়ে যায় কিন্তু এটা শুনে আমার খুবই আনন্দ হয়েছে যে, কলিজার টুকরা মিয়া আহমাদুল্লাহ   জালিমদিগকে মা করে দিয়েছেন এমনকি তাহাদিগকে এতদূ পর্যন্ত বলেছে যে, আমার সাথে তোমরা যে, আচরণ করেছ কারও নিকট এঁটা প্রকাশ করোনা  কেননা, এতে তোমাদের  দূর্নাম  হবে   জালিমের সাথে উত্তম আচরণের কথা শুনে আমার তায়েফের সেই ঘটনা স্মরণ হল, যখন সাইয়্যেদুল মুরসালি সাল্লালাহু আলাইহি ওসাল্লাম কাফিরদের অসহনীয় জুলুম সত্ত্বেও বদ দুআ করার পরিবর্তে তাদের হিদায়াতের দুআ করে বলেছিলেন,  ‘আল্লাহুম্মাহদি কাওমি ফাইন্নাহুম লা ইয়া’লামুন’ অর্থঃ  হে আল্লাহ , আমার কওমকে হিদায়াত দান কর কেননা তারা জানেনা

যাই হোক কলিজার টুকরার এই আচরণ লক্ষ্য করে তার নশীলতার গুণের  কথা আচঁ করতে পারলাম , ফলে আমার মৃত্যু পর সাময়িকভাবে খেলাফত আন্দোলনের দায়িত্ব তাকে প্রদানের বাসনা হৃদয়ে জাগ্রত হয়

দ্বিতীয় কারণ এই যে, আমার মৃত্যুর পর আল্লাহ না করুণ এই বিষয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে যেমন  রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর আনসার মুহাজেরীনগণদের মাঝে খিলাফত প্রশ্নে ইখতিলাফ হয়েছিল  এমনকি পরিস্থিতি আমাদের মধ্য হতে আমাদের আমীর এবং তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের আমীর পর্যন্ত গড়িয়েছিল যা পরবর্তীতে ‘আল আইম্মাতু মিন কুরাইশ’ অর্থঃ  ইমাম কে কুরাইশ বংশীয় হতে হবে এই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত মূলক হাদীসের আলোকে আবু বকর সিদ্দিক (রা) খলিফা নির্বাচিত হন এবং ইখতিলাফের অবসান ঘটে আল্লাহ না করু আমার মৃত্যুর পর এমন পরিস্থিতি উদ্ভব হয়, তাই মজলিশে শুরার আলেম দ্বিনদার বুদ্ধিজীবীগণদের সর্বসম্মতিক্রমে  কোন আমীর নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সাময়িকভাবে  আমি  আমার কলিজার টুকরাকে মনোনীত রে  যাচ্ছি, যেন ইখতিলাফের দরজা বন্ধ হয়ে যায় এবং আমার দাফন কাফন এর ব্যাপারে বিলম্বে পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়

যতক্ষণ পর্যস্ত বাংলাদেশের পাক জমিনে খিলাফতের ইলাহিয়া কায়েম না হবে ইমাম মাহদী আলাইস সালাম এর আর্বিভাবকাল পর্যন্ত এই আন্দোলন পরিত্যাগ করবেন না; বরং
(দছত আয তলব নাদারম তা কামে মান বরাইয়াদ , ইয়া তনরছদ বজানা ইয়াজাঁ যেন বর আইয়াদ)
অর্থঃ  মকছুদ হাসিল না হওয়া পর্যন্ত আমি হাত গুটাব না হয় দেহ প্রিয়তম এর নি পৌছবে কিংবা এই প্রা দেহ হতে বের হয়ে যাবে’ - নির্দেশ মোতাবেক সক্রিয় প্রচেষ্টা জারি রাখবেন যদি ইমাম মাহদী () এর আর্বিভাবের বিলম্ব ঘটেতাহলে প্রত্যেক যুগে ইমমি মাহদীর অনুরূ কাকেও কেন্দ্রে আসীন করে তাঁর নেতৃত্বে অবশ্য অবশ্যই কাজ জারি রাখবেন  এবং ইসলামী  হুকুমত কায়েম না হওয়া পর্যন্ত কিছুতেই ক্ষান্ত হবেন না ;  বরং আমাদের  আসলাফ পূর্ববর্তীগণের মত আল্লাহর পথে শাহাদাতের আবেহায়াত পান করে নিজদিগকে (ফালাহু আজরু মিয়াতু শহীদ ) অর্থ :- ‘সে একশত শহীদের সওয়াব লাভ করবে সুসংবাদের উপযুক্ত প্রমাণিত করতে হবে

আন্দোলন কর্মীদেরকে আরো উপদেশ এই যে, কোন ক্রমেই যেন তারা আপোষে ইখতিলাফ না করে,  বরং শত দেহ এক প্রাণ হয়ে থাকে সকলে এক থাকবে এবং নেক থাকবে তবে মনে রাখতে হবে যে, ইত্তিফাক ইত্তিহাদের বুনিয়াদ হল আমিত্ব মিটিয়ে দেয়া তার সুরত এই যে, ওলামায়ে কেরাম দ্বীনদার বুদ্ধিজীবিগণদের পরামর্শক্রমে কাকেও নিজেদের আমীর কেন্দ্রীয় ব্যক্তি রূপে মনোনীত করে নিবে এবং তার আনুগত্যকে  নিজেদের জন্য ফরজ মনে করবে  কেন্দ্রের ফায়সালা মোতাবেক যথাসম্ভব জানমালের কোরবানী পেশ করতে থাকবে  স্মরণ রাখবে , যতক্ষণ আমিত্বকে না মিটান হবে ততক্ষণ সমগ্র পৃথিবীতে শুধু ফ্যাসাদ ছড়াতে থাকবে এবং ইলাহী খেলাফতের নামে ইবলিসী খিলাফতই শুধু কায়েম হবে  আল্লাহ আমাদেরকে হিফাজত করুন  সর্বোপরি ইত্তিফাক ইত্তিহাদ প্রতিষ্ঠা ক্ষেত্রে পাবন্দির সহিত বাজামায়াত পাঞ্জে গানা নামাজ আদায়, ইসলামী সীরত-সুরত অভিন্ন পোশাক পরিচ্ছদেরও বিরাট প্রভাব রয়েছে

আর একটি কাজ এই করতে হবে যে, ইসলামের গৌরব মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য ইনফিরাদী ইজতিমায়ী দোয়ার নিয়মিত ব্যবস্থা করতে হবে আলহামদুলিল্লাহ!  আমরা নূরিয়া মাদরাসায় পাঞ্জেগানা নামাজের পর  প্রত্যেক বৃহস্পতিবার এবং মাসিক  ইজতিমায় বিশেষ দোয়ার সিলসিলা জারি করে রেখেছি আমাদের নিকট দোয়া ভিন্ন কি  অস্ত্রই বা আছে

সকল মুজাহেদীন এবং খেলাফত কর্মীদেরকে এই অছিয়ত করছি যে, খেলাফতের আন্দোলনের এই শান্তি পূর্ণ জিহাদের দ্বারা আমাদের উদ্দেশ্য শুধু এটাই হওয়া উচিত যে, আল্লাহ পাকের জমিনে তার প্রেরিত আহকাম জারি করে পূর্ণ খিলাফতে ইলিহিয়া ইসলামী  হুকুমত কায়েম করা এবং সর্বপ্রকার জুলুমঅত্যাচারের মূলোৎপা করে আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠ মাখলুক  ইনসান কে শান্তি স্বস্তির জীবন যাপনের সুযোগ দান করা আর আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি যামন্দি হাসিল করে হুসনে খাতেমার সহিত দুনিয়া হতে বিদায় হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করা মনে রাখতে হবে যে, নিয়তের বিশুদ্ধতাই সবাগ্রে জরুরী

নি:সন্দেহে খেলাফত আন্দোলন একটি দ্বিনী জিহাদ;  কিন্তু এটা অস্ত্রের জিহাদ নয়, এর উপরে আমাদের ক্ষমতা যেহেতু নেই, সেহেতু আমরা এর জন্য আদিষ্ট নই তবে কখনো কখনো নাম মাত্র ভোটের জিহাদ য়ে থাকে কিন্তু এই জিহাদে যেহেতু ক্ষমতাসীন ব্যক্তি সকল সরকারী শক্তি স্বহস্তে  রেখে নির্বাচনে অবর্তীণ হয় এবং যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিজের পক্ষেই শুধু ইস্তেমাল রে সেই সংগে জালভোটসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ পন্থার আশ্রয় নেয়, সেহেতু বাহ্যিকভাবে অন্য কারো  পক্ষে কামিয়াবীর কোন সম্ভাবনা থাকে না কিন্ত বান্দা যেহেতু জাহেরী কামীয়াবীর জন্য আদিষ্ট নহে;  বরং বান্দার কাজ হল যথাসাধ্য কোশেশ  করে যাওয়া এবং আজাহিদু ফিল্লাহি হাক্কা জিহাদিহি অর্থ : আল্লাহর পথে যথাযোগ্য জিহাদ চালিয়ে যাও এই খোদায়ী  নির্দেশের বাস্তাব নমুনা পেশ করা  কামিয়াবী হাতে আসা না আসা এবং ফলাফল অনুকূল হওয়া না হওয়া কিছুতেই বান্দার জিম্মাদারী  নয় এবং আখেরাতেও এর জন্য জওয়াবদেহী  করতে হবে না আখেরাতে শুধু এটাই জিজ্ঞাসা  করা হবে যে, তুমি তোমার শক্তি সামর্থ অনুযায়ী  কি পরিমাণ কোরবানী পেশ করেছ এবং কতদূর কোশেশ জারি রেখেছ  সুতরাং জাহেরী কামিয়াবী না-কামিয়াবীর  উর্ধে  থেকে নির্বাচনী  জিহাদে  অবশ্যই হিসসা  নিতে হবে এতে পরে কোন একদিন আল্লাহ পাকের রহমতের দরিয়ায় মউজ আসবে এবং সকল প্রতিকুল অবস্থা সত্বে তিনি জাহেরী কামেয়াবী  দান রবেন আল্লাহ পাকের জন্য এটা মোটেই কঠিন বিষয় নয়

অবশ্য কিছু কিছু রূহানী অস্ত্র আছে, যা সকল দ্বীনি আন্দোলন ইসলামী জিহাদের জন্য খুবই  জরুরী সেই রূহানী অস্ত্র হল ছয়টি মূলনীতি যে গুলিকে দ্বীনি আন্দোলনের উসূলে সিত্তাহ’ বা ‘ছয় উসূল’ বলা যেতে পারে এই ছয় উসূল কোরআন শরীফের সূরাতুল আনফালে আমর নেহী বা আদেশ নিষেধের আকারে খুবই তরতবীরের সহিত সাজানো হয়েছে  উহার খুলাছা নিন্মরূ:-

অটল অবিচল থাকা
অধিক পরিমাণে আল্লাহ পাকের যিকির করা
৩।আল্লাহ পাকের হুকুম মেনে চলা এবং নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুসরন করা ৪।পারস্পারিক বিচ্ছিন্নতা বর্জন করা
৫।মর্জি বিরুদ্ধে কোন পরিস্থিতি দেখা দিলে সবর করা
৬।নিয়ত খালিস বিশুদ্ধ রাখা

উপরোক্ত ছয় উসূল কোআন পাকের সূরা আনফালে ৪৫ ৪৬ নং আয়াত গুলিতে দেখুন

অর্থ:- হে মুমিন গণ ! যখন তোমাদের সাথে কোন সম্প্রদায়ের মোকাবেলা হয় তখন তোমরা দৃঢ়পদ থাক  আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করবে যাতে তোমরা সাফল্য অর্জন করতে পার আর আল্লাহ রাসূলের আনুগত্য কর পরস্পরে বিবাদ কর না না হয় তোমরা দুর্বল হয়ে যাবে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে আর ধৈয্যের সাথে কাজ কর বিশ্বাসের উপর, আল্লাহ ধৈর্য্যধারণকারীদের সাথে থাকেন

খেলাফত আন্দোলনের সকল কর্মী নেতৃবর্গকে আমি অছিয়ত করছি যে, তারা যেন এই ছয় উসূলে পূর্ন পাবন্দী করে জিহাদে চালিয়ে যান এই বিষয়ে যেন কোন প্রকার অলসতা উদাসীনতা প্রকাশ না করেন, বরং উপরোক্ত ছয়টি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সকল শরীয়ত বিরোধী  কাজের যথাসাধ্য প্রতিরোধ করতে থাকেন এবং ইসলামী হুকুমতের জন্য আন্দোলন করতে থাকবে  তবে প্রত্যেক বিষয়ে দৃষ্টি আল্লাহর প্রতি নিবদ্ধ থাকবে কারো অংশ গ্রহণ অথবা বিরুদ্ধচারণ এবং নিন্দা সমালোচনা কোন পরওয়াই করবেন না যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওফাতের পর যাকাত অস্বীকারকারীদের মুকাবেলায় জিহাদ করার জন্য হযরত সিদ্দিকে আকবার রাযিআল্লাহু আনহু একাই প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন অথচ তখন সাহাবাহণের মতামত হযরত সিদ্দীকে আকবরের বিপরীতে ছিল  কিন্তু যেহেতু স্বীয় মতামতের ব্যাপারে সিদ্দিকে আকবার (রা) এর অন্তর দ্বীধাহীন ছিল, সেহেতু অন্যান্য সকলের বিরোধিতার সত্বেও যাকাত অস্বীকারকারীদের  বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্তে তিনি অটল থাকেন  দলিলরূপে সংখ্যাগরিষ্টার সমর্থনকারীরা কোথায় ? খুব মনোযোগের সহিত উপরোক্ত ঘটনাটি লক্ষ্য করুন  ইসলামের দৃষ্টিতে মতের বিশুদ্ধতা সারগর্ভতাই গ্রহণযোগ্য মতের সংখ্যাগরিষ্ঠতা গ্রহনযোগ্য নহে 

যাই হোক বর্তমান কালের মুফতিয়ানে কিরাম যদি শরীয়ত বিরোধী কর্মকান্ড  প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে আসার অনুমতি প্রদান করেন, তাহলে শায় সাদী (রা) এর ফতোয়ায় ভিত্তিতে রক্তপাত বৈধ কথামতে অবশ্যই মুকাবেলা করতে হবে এমনকি জানের খতরা থাকলে করতে হবে এবং মুকাবেলা আপনাদের  জন্য হবে খুবই মোবারক কেননা ইমাম হোসাইন (রা) যিদকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে কারবালার মাঠে সপরিবারে শাহাদাত বরন করেছেন  ইমাম আবু হানিফা (রা) খলিফা মনসুরের মুকাবেলায় নফসে জাকিয়ার আন্দোলনকে সমর্থন করতে গিয়ে মজলুম হয়েছেন  এমনকি স্বয়ং নফসে যাকিয়া এই থে শাহাদাত বরন করেছেন   ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ) মামুনুর রশিদে গোমরাহী প্রতিরোধ করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত শাহাদাতের আবেহায়াত পান করেছেন এভাবে সহস্র নয়, বরং লক্ষ লক্ষ নিবেদিত প্রাণ মুজাহেদীনে ইসলাম জালেম সরকারের মুকাবেলা করতে গিয়ে শাহাদাতের সৌভাগ্য লাভ করেছেন এবং (ফুযতু ওয়ারাব্বিল কাবা) কাবা শরীফের রবের কসম, আমি কামিয়াব হয়ে গেছি’ - এর সুন্নত জিন্দা রে  জান্নাতে প্রবেশ করেছেন

-           অধম  মোহাম্মাদুল্লাহ

-           ১৮ শাওয়াল ১৪০৬ হিজর